5.9 C
New York
Friday, March 29, 2024

Buy now

মাশরাফি ভাই বলেছেন, “হয় মারবি, নয় মরবি”

Mushfiqur Rahim, bangladesh cricket,asia cup,bd sports news,bd sports,
মুশফিকুর রহিম। ছবি: এএফপি

গতকাল পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের ম্যাচটি ছিল যেন বাঁচা মরার লড়াই। জিতলে এশিয়া কাপের ফাইনাল আর হারলে বাদ। অথচ এমন একটি ভয়ংকর যুদ্ধে নেই দলের প্রধান দুই কান্ডারি সাকিব-তামিম। যারা আছেন তাদের মধ্যে

মুশফিক, মাশরাফি সহ অনেকেই চোটে আক্রান্ত নয়তো মানসিকভাবে বিদ্ধস্ত। আর তাইতো বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন মাশরাফি মাঠে নামার আগে সতীর্থদের উজ্জীবিত করতে যেয়ে বলেছিলেন, ‘যুদ্ধে নামলে পেছনে তাকানোর সুযোগ নেই। গা বাঁচিয়ে চলা যায় না। হয় মারবি, নয় মরবি।’

অনেকদিন থেকেই বাংলাদেশের ফর্ম ভালো যাচ্ছে না। তার মধ্যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে গিয়ে আঘাত পেয়ে তামিম ইকবাল দলে নেই। আঙুলের চোটে আক্রান্ত সাকিব আল হাসান পর পর ৩ টি ম্যাচ খেললেও কালকের ম্যাচে ছিলেননা অনেক বেশি ব্যথার কারণে। আর মুশফিক তো ১ ম্যাচ বাদে সবগুলো ম্যাচেই খেলেছেন তাঁর ভাঙা পাঁজর নিয়ে ব্যথানাশক ইনজেকশন নিয়ে। এমনকি কাল তাঁর ম্যাচ জয়ী ৯৯ রানের ইননিংসটিও খেলেছেন পাঁজরের ব্যথা নিয়েই। মোস্তাফিজের পায়ের মাংসপেশিতে টান ধরেছে আবুধাবির অসহ্য গরমে। এমন একটি দল কিভাবে পারলো পাকিস্তানের মতো মহা পরাক্রমশালী এক দলকে হারাতে। এমন একটি জয় আসলেই অনেক সাধনার অনেক কষ্টের। ম্যাচ–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকুর রহিম জানালেন কিভাবে ক্যাপ্টেন মাশরাফি উজ্জীবিত করেছিলেন চোট জর্জরিত এই দলকে, ‘মাশরাফি ভাই সবাইকে একটা কথাই বলেছেন, আমরা যখন যুদ্ধে নেমে যাই, তখন পেছনে তাকানোর সুযোগ নেই। যুদ্ধে নেমে গা বাঁচিয়ে চলা যায় না। হয় মারবেন, না হয় মরবেন, যেকোনো একটা। এটা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা ফলাফল নিয়ে ভাবিনি। শতভাগ দেওয়া নিয়ে ভেবেছি। সবাই সবার শতভাগ দিতে পারলে দিন শেষে আমরাই জয় পাব।’

মাশরাফির কথা দলের উপর কেমন প্রভাব বিস্তার করেছিল তা বোঝা যায়, খেলা শুরু হতে না হতেই যখন ৩ উইকেট গায়েব তখন ঠিকই মুশফিক-মিঠুনের ১৪৪ রানের জুটি লড়াইয়ে টিকিয়ে রেখেছিলো বাংলাদেশকে। এ তো গেলো ব্যাটিংয়ের কথা আর বোলিং? সাকিবের মতো অভিজ্ঞ বলার না থাকায় তার যে শূন্যস্থান তৈরি হয়েছিল তা বুঝতেই দেননি পার্ট টাইম দুই বোলার মাহমুদউল্লাহ এবং সৌম্য সরকার। তাদের বোলিং দেখে মনে হয়েছে দুজনই চরম বিশেষজ্ঞ বোলার।

১০ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে মাহমুদউল্লাহ নিয়েছেন ১ উইকেট আর সৌম্য ৫ ওভার বোলিং করে ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। ফিল্ডিংয়েও যেন ভীষণ উদ্দীপ্ত ছিল দলের সবাই।

এই এশিয়া কাপে পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শোয়েব মালিক প্রতিপক্ষের দলগুলোর জন্য ছিলেন চরম হুমকি স্বরূপ। মুশফিক রসিকতার সুরে মালিকের ক্যাচের ব্যাপারে বললেন ‘তাঁকে আউট করাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর ক্যাচটা তো অবশ্যই দুর্দান্ত ছিল। আল্লাহর রহমতে আমরা বুড়ো বয়সেও দু-একটা ভালো ক্যাচ ধরতে পারছি। সেদিক থেকে অনেক খুশি, মাশরাফি ভাইও খুশি, আমিও।’

এশিয়া কাপের ফাইনালে প্রতিপক্ষ ভারতের বিপক্ষে শিরোপা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী মুশফিক। তিনি বলেন, ‘সম্ভব তো অবশ্যই। মানুষ আশায় বাঁচে। লক্ষ্য ছিল এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলব। তারপর চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচে আমরা আমদের বেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারলে যেকোনো কিছু হতে পারে। আমাদের সামনে খুব ভালো সুযোগ আছে। আর ভারতের মতো দলকে হারানো অসম্ভব কিছু না। আমরা এর আগেও ওদের হারিয়েছি। এটা ঠিক, আমরা ধারাবাহিকভাবে তাদের সঙ্গে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারিনি। আর এটাও ভুললে চলবে না, তাঁরা কিন্তু ওয়ানডের সেরা দুই দলের একটি। আমরা যদি আমাদের বেসিকটা ঠিক রেখে পারফর্ম করতে পারি, তাহলে তাদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব।’

ভারতের বিপক্ষে স্বপ্নভঙ্গের খাতাটা দিন দিন ভারী হতেই আছে বাংলাদেশের। দলের প্রধান দুই অস্ত্র সাকিব তামিম ছাড়া সত্যিই কঠিন হবে জয় পাওয়া। তবে মুশফিকের মতো বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ আশা ছাড়তে নারাজ। জয় আমাদের হবেই।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,913FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles